মোস্তফা মুশফিক

দক্ষিণ এশীয় সহযোগিতা সংস্থা (SAARC) ১৯৮৫ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়, যার লক্ষ্য ছিল আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সাধন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও মালদ্বীপ—এই সাতটি দেশ ছিল সার্কের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য; ২০০৭ সালে আফগানিস্তান যুক্ত হলে সদস্যসংখ্যা দাঁড়ায় আটে। সার্কের প্রতিষ্ঠার পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখেন বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, যিনি ১৯৮০ সালে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার প্রস্তাব দেন। সার্কের কাঠামো মূলত অর্থনৈতিক, সামাজিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে গঠিত। ১৯৮৭ সালে সার্ক সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সন্ত্রাসবাদ দমনে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে দক্ষিণ এশীয় মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (SAPTA) এবং ২০০৬ সালে দক্ষিণ এশীয় মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল (SAFTA) চালু হয়। সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়, সার্ক উন্নয়ন তহবিল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোও এর আওতায় প্রতিষ্ঠিত হয়।

অনুবাদ: মুহিউদ্দীন ইকবাল, তামিম মুনতাসির

সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অভিযোজন একটি সভ্যতার উপর আরেকটির বিজয়ের মধ্যে দিয়েই পরিপক্কতা লাভ করে। তারপর এই নয়া সভ্যতা  প্রাচীন সংস্কৃতির নিজস্ব স্বাভাবিক যাত্রার গোড়া কেটে দিয়ে সব ঐতিহ্যকে ছিন্নভিন্ন করে দেয় কিংবা প্রাচীন আর্থ সামাজিক ব্যবস্থাকে কবজা করে ফেলে। এতে করে প্রাচীন ব্যবস্থার কোমর ভেঙে এতই দুর্বল হয়ে পড়ে যে তার আর নিজস্ব ঐতিহ্যকে ধারণ করে দাঁড়ানোর মত মুরোদ থাকেনা। জনপদের বাসিন্দারা হয়ে পড়ে রিফুজি। এমন জিল্লতির জিন্দেগি থেকে রেহাই পেতে এবং নিজেদেরকে ব্যক্তি হিসেবে টিকিয়ে রাখার জন্য তখন তারা বিজিত সভ্যতার কৃষ্টি কালচারকে গ্রহণ করে নেয়। এই বিজিত মানুষেরা আসলে জবরী-সিপাহীর মতো, যাদেরকে জবরদস্তি বাহিনীতে ভর্তি করানো হয়েছিল।

তামিম মুনতাসির, মোস্তফা মুশফিক, মুহিউদ্দীন ইকবাল

আইনে আচ্ছাদিত সার্বভৌম ক্ষমতার নেকাব যখন মজলুমের সামনে উন্মোচিত হয় যখন তখন আইন তার সহজাত অর্থময়তা ও কার্যকরতা হারিয়ে ফেলে। জনতার বিপ্লবী সহিংসতার মধ্য দিয়ে যখন তাদের চূড়ান্ত ক্ষমতা প্রকাশিত হয় আইন হয়ে যায় জনতার কাছে ছেলেখেলা, যার মাধ্যমে আইন প্রকাশ করে অনন্ত বাতিলের মধ্যে।

তামিম মুনতাসির

ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পূর্ণ হলো আজ। কাঁটাতারের সীমান্তে ঝুলে থাকা ফেলানী খাতুনের লাশ আসলে নিছক একটি খুনের চিত্র নয় বরং ভারতের আধিপত্যবাদী, সম্প্রসারণবাদী, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের সামনে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বাস্তব চিত্র। মানবাধিকার সংস্থা “অধিকার” এর তথ্য অনুসারে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারত নিরাপত্তা বাহিনী বিএসএফ কতৃক বাংলাদেশের নাগরিক খুন হয়েছে ৫৮৮ জন এবং আহত হয়েছে ৭৭৩ জন। ১৪ বছর হয়ে গেল ইতোমধ্যে, ফেলানী হত্যা মামলা আজও ঝুলে আছে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। এই মামলার প্রতি ভারতীয় সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং এর বিচারিক প্রক্রিয়ার বিশ্লেষণ করলে এটি ধরে নেওয়া খুবই স্বাভাবিক যে, ফেলানী হত্যার বিচার হবে না। ফেলানীর মামলার ক্ষেত্রে সীমান্ত হত্যায় বিচারহীনতার আলামত কোন বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয় বরং বিচারহীনতার সংস্কৃতির চলমান ধারাবাহিকতা। প্রতিনিয়ত নির্বিচারে সীমান্ত হত্যা স্বাভাবিক কোন ঘটনা নয় বরং একটি জরুরী অবস্থা। কিন্ত, এই জরুরী অবস্থা আমাদের কাছে স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে ব্যতিক্রম হিসেবে ধরা দেয় না। জরুরী অবস্থা চর্চার মধ্যে দিয়ে একটা ধরনের ঐতিহ্য বা প্রথায় উপনিত করা হয় ( Hurd,1999)। ভারত সীমান্ত হত্যাকান্ডের মতো “জরুরী অবস্থা” কে স্বাভাবিক অবস্থায় পরিনত করেছে। এই স্বাভাবিক অবস্থার ভ্রম থেকে বের হয়ে যখন একটি “আসল জরুরী অবস্থায়” উপনীত হতে পারব, তখন ফেলানীদের আর অকাতরে জীবন দিতে হবে না। ভারত রাষ্ট্র কতৃক বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে নিহত একেকটি জীবন হয়ে আছে হোমো স্যাকের বা নগ্ন জীবন। 

মুহিউদ্দীন ইকবাল

দশ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া ১৯৭৪ সালের ভয়াল দুর্ভিক্ষ ঘটে যাওয়ার নেপথ্যে শুধু দেশীয় শাসনতান্ত্রিক ব্যর্থতা নয়, দায় আছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখ ফিরিয়ে নেয়ারও। এই দুর্ভিক্ষের দায়ভার প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর নব্য স্বাধীন হওয়া রাষ্ট্রের কাঠামোগত দুর্বলতা্র উপর চাপিয়ে দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। কেবল খাদ্যযোগান আর খাদ্যবন্টন সমস্যা দিয়ে এই দুর্ভিক্ষ বোঝা সম্ভব নয়।

সালেহ খান

এখন আসা যাক, বিভাজনের রাজনীতি বলতে এখানে কি বুঝানো হয়েছে। এটা বোঝার আগে আমাদেরকে জাতীয়তাবাদের উত্থান ও পরিণতি সম্পর্কে ধারণা রাখা দরকার। আমাদের এখানকার প্রেক্ষাপটে, জাতীয়তাবাদ প্রথমদিকে অনেক ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হিসেবে গড়ে ওঠে।

ওয়ায়েল হাল্লাক

আঠারো শতাব্দি থেকে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো  দখলকৃত কলোনিতে ক্রমাগতভাবে তাদের ক্ষমতাকে দৃশ্যমান করে তোলার তাগিদে শুধু আচার অনুষ্ঠান কিম্বা রঙ্গমঞ্চ প্রদর্শন করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং অফিসিয়ালি তাদের কার্যক্রম শুরু করে।

তালাল আসাদ

২০১১ সালের এপ্রিলে বাদশাহ ফয়সাল রিসার্চ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ সেন্টার এবং সৌদিতে অবস্থিত অস্ট্রিয়ান দুতাবাসের পৃষ্ঠপোষকতায় আমার বাবার জীবন ও কর্মের উপর এক আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। যদিও উক্ত কনফারেন্সের মুল বিষয়বস্তু ছিল ‘মোহাম্মদ আসাদ- এ লাইফ ফর ডায়ালগ নামে।’